ওয়েবসাইটের কাঠামো:
যে অবকাঠামোতে একটি ওয়েবসাইটের সব তথ্য উপস্থাপন করা হয়, তাকে ওয়েবসাইটের কাঠামো বলা হয়। ওয়েবসাইটের কাঠামো তিনটি অংশে বিভক্ত। যথা:.
- হোমপেজ
- মূল সেকশন বা মূল ধারার পেজ
- উপ-সেকশন বা উপধারার পেজ
১. হোমপেজ: হোমপেজ ব্রাউজার শুরুতে লোড করে। হোমপেজ হলো একধরনের সূচি। এই পেজে মূল প্রোগ্রাম, ব্যানার, অ্যানিমেশন যুক্ত থাকে। এখানে মেন্যু তৈরি করে অন্যান্য পেজের সঙ্গে যুক্ত করা থাকে।
২. মূল সেকশন বা মূল ধারার পেজ: হোমপেজের পরের ওয়েবপেজগুলোকে মূল সেকশন বলে। মূল সেকশন কয়েকটি পেজ নিয়ে গঠিত হয়।
৩. উপ-সেকশন বা উপধারার পেজ: মূল সেকশন আবার অনেকগুলো পেজের সঙ্গে যুক্ত। হোমপেজ থেকে মূল সেকশন এবং মূল সেকশন থেকে উপ-সেকশনে পেজের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং লেখার পরিমাণও বাড়তে থাকে।
উপরিউক্ত পেজগুলো বিভিন্নভাবে সাজানো থাকতে পারে। ওয়েবসাইটের বৈশিষ্ট্য অনুসারে তার বিভিন্ন পেজগুলো নিম্নোক্ত চারভাবে সাজানো যেতে পারে। যেমন:
- ট্রি বা হায়ারারকিক্যাল
- ওয়েব লিংকড বা নেটওয়ার্ক
- সিকুয়েন্সিয়াল বা লিনিয়ার
- হাইব্রিড বা কম্বিনেশন
ট্রি বা হায়ারারকিক্যাল কাঠামো:
হায়ারারকি কাঠামোতে ওয়েবসাইটগুলো একটি হোমপেজকে কেন্দ্র করে বিন্যস্ত থাকে। হোমপেজ থেকে অন্য পেজগুলোয় আসা-যাওয়া বা নেভিগেট করার ব্যবস্থা থাকে। হায়ারারকি কাঠামোর সাইটগুলো একধরনের শৃঙ্খলা মেনে চলে বলে যেকোনো ব্যবহারকারীর জন্য এ কাঠামোটি অত্যন্ত সহজবোধ্য। এ কারণে প্রাতিষ্ঠানিক সাইটগুলোয় এই কাঠামো বেশি ব্যবহার করা হয়।
হায়ারারকি কাঠামোর দুটি ভাগ রয়েছে:
- এক স্তরের হায়ারারকি কাঠামো
- বহুস্তরের হায়ারারকি কাঠামো।
এক স্তরের হায়ারারকি কাঠামো:
এ কাঠামোয় প্রতিটি ওয়েবপেজ শটার বা তারার মতো একটি কেন্দ্রীয় পেজের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে। যেকোনো পেজে যেতে হলে হোমপেজ থেকে যেতে হয়। এক পেজ থেকে অন্য পেজে যাওয়া যায় না।
বহুস্তরের হায়ারারকি কাঠামো:
এ কাঠামোয় একটি হোমপেজের সঙ্গে একাধিক সরল লিনিয়ার কাঠামো যুক্ত থাকে। এ ধরনের কাঠামোয় ওয়েবসাইটের পেজগুলোকে সহজেই শ্রেণিতে ও উপ-শ্রেণিতে ভাগ করা যায় বলে বিশাল আকারের সাইটগুলো সুশৃঙ্খলভাবে সাজাতে এই কাঠামো ব্যবহার করা হয়।
ওয়েব লিকংড বা নেটওয়ার্ক স্ট্রাকচার : এখানে সবগুলো ওয়েবপেজের সাথেই সবগুলোর লিংক থাকে অর্থাৎ একটি মেইন পেজের সাথে যেমন অন্যান্য পেজের লিংক থাকবে তেমন প্রতিটি পেজ তাদের নিজেদের সাথে ও মেইন পেজের লিংক থাকে। ফ্রেম ব্যবহার করে তৈরি করা ওয়েবপেজগুলোকেই এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে লিংক করা হয়ে থাকে, যাতে একটি ছোট ফ্রেমের মধ্যে অন্যান্য পেজের লিংকগুলো মেনু আকারে রাখা যায়। এই ফ্রেমটি সাধারণত স্থির থাকে এবং কোন একটি লিংক নির্বাচন করলে ঐ পেজটি একটি অপেক্ষাকৃত বড় ফ্রেমের মধ্যে দেখায়। এটি নন লিনিয়ার এবং অপেক্ষাকৃত জটিল স্ট্রাকচার এবং লিংকের সংখ্যা অপেক্ষাকৃত বেশি হওয়ায় এটির ব্যবস্থাপনাও জটিল। কিন্তু, এক পেজ থেকে অন্য যে কোন পেজে যাবার সুবিধা থাকায় অনেকক্ষেত্রে ব্যবহারকারীর কাছে এটির মাধ্যমে কাঙ্খিত তথ্য খুজে পাওয়া সহজতর। তথাপিও এই কাঠামো দিয়ে তৈরি সাইটের প্রচলন সে রকম নেই বললেই চলে।
সিকোয়েন্স বা লিনিয়ার কাঠামো:
ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ওয়েবপেজে তথ্য বিন্যস্ত করে রাখার জন্য লিনিয়ার কাঠামো সবচেয়ে সহজ ও পরিচিত পন্থা। বই-পত্র, ম্যাগাজিন ইত্যাদিতে এই কাঠামো ব্যবহার করা হয়। লিনিয়ার কাঠামোয় ওযয়েবপেজগুলো ধারাবাহিকভাবে পর পর সংযুক্ত থাকে।
লিনিয়ার কাঠামোর আবার দুটি ভাগ রয়েছে:
- সরল লিনিয়ার কাঠামো
- যৌগিক লিনিয়ার কাঠামো।
সরল লিনিয়ার কাঠামো:
এ কাঠামোয় ওয়েবসাইটের ওয়েবপেজগুলো পর পর সংযুক্ত থাকে। ফলে একটি ওয়েব থেকে অন্যটিতে যেতে হলে ধাপে ধাপে যেতে হয়। সাধারণত বিভিন্ন প্রশিক্ষণ বা শিক্ষামূলক সাইটে এই কাঠামো ব্যবহার করা হয়।
যৌগিক লিনিয়ার কাঠামো:
এ কাঠামোয় ওয়েবসাইটের ওয়েবপেজগুলো পর পর সংযুক্ত থাকলেও, প্রতিটি পেজের সঙ্গে অন্য এক বা একাধিক পেজের সংযোগ থাকতে পারে।
হাইব্রিড বা কম্বিনেশন কাঠামো:
হাইব্রিড কাঠামো হচ্ছে সবচেয়ে কার্যকর কাঠামো। দুই বা দুয়ের বেশি কাঠামোর মিশ্রণে এই কাঠামো তৈরি হয়। বিশাল আকৃতি ও জটিল ওয়েবসাইট তৈরিতে এই কাঠামো বেশি ব্যবহূত হয়। হাইব্রিড কাঠামোর মূল ভিত্তি হিসেবে হায়ারারকি কাঠামোকেই বেছে নেওয়া হয়। হায়ারারকি কাঠামোর সঙ্গে লিনিয়ার কাঠামো বা ওয়েব লিংকড কাঠামোর সংমিশ্রণে হাইব্রিড কাঠামো গড়ে ওঠে। তবে অনেক সময় হায়ারারকি, ওয়েব লিংকড ও লিনিয়ার তিনটি কাঠামো মিলেই হাইব্রিড কাঠামো গঠন করা হয়।